Sunday, March 26, 2023

অনলাইনে আজীবনের জন্য ব্রেইন আপলোড সম্ভব হলে কেমন দুনিয়া হবে?

এমন একটা সময় যদি আসে, যখন মানুষের ব্রেইন আজীবনের জন্য অনলাইনে আপলোড করে রাখা সম্ভব হবে, তখন দুনিয়াটা কেমন হবে? 

রক্তমাংস সহ মস্তিষ্ক নয়, শুধুমাত্র আপনার-আমার চিন্তাগুলো একটি কম্পিউটারের মেমোরিতে সংরক্ষণ করা হবে। আমরা মারা গেলেও বছরের পর বছর ব্রেইন থাকবে জীবিত; একা একাই বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে থাকবে।

এই ব্যাপারটিকে অসম্ভব মনে হলেও ভবিষ্যতে এমনটাই ঘটার সম্ভাবনা আছে। চ্যাটজিপিটির মতো AI চালিত চ্যাটবট গুলো যদি এখনই মানুষের সেন্স, হিউমার বুঝে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, তবে অনুরুপ অ্যালগরিদম প্রতিটা মানুষের জন্য আলাদা ভাবে ডিজাইন করা শুধু সময়ের বাকী!

বর্তমানে আপনার পরিচিত যত মানুষ আছে তাদের মধ্যে কতজন দৈনিক আপনার সাথে সরাসরি (face to face) কমিউনিকেশন করতে পারে? নির্দিষ্ট কয়েকজন বাদে অধিকাংশ মানুষই কিন্তু অনলাইন / সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনাকে অনুসরণ করে।

আপনার আইডি থেকে পোস্ট দেয়া হলে তারা ভাবে আপনি দিয়েছেন / খেয়াল করতেছেন; অথচ আপনি কিন্ত সারাক্ষণ পোস্টের সাথে নেই। আপনার মতো করে একটি ছবির সাথে নাম লাগিয়ে সেই প্রোফাইল দিয়ে আপনার চিন্তা বা কার্যক্রম গুলো প্রকাশ করার কারনে মনে হচ্ছে মানুষটা আপনি নিজেই।  

আবার চ্যাটিং এর সময় মনে হয়, একটি মানুষ আপনাকে রিপ্লাই দিচ্ছে। অথচ 'মেসেঞ্জার' প্রোগ্রামিং দিয়ে তৈরিকৃত শুধুমাত্র একটি অ্যাপ, যেটাকে কেউ যা কিছু লিখে দেয়, সেটাই অন্যজনের কাছে এমনভাবে পৌঁছে দেয়, মনে হয় যেন একটি মানুষ-ই রিপ্লাই দিচ্ছে।  

তাহলে বর্তমানে অনলাইনে জীবিত থাকার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র এই অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে কিছু নির্দেশনা দিতে হয়। এখন আপনি যেভাবে অ্যাপগুলোকে নির্দেশ দিতে পছন্দ করেন সেই আবেগ, অনুভূতি, চিন্তা, স্মৃতি গুলো যদি কম্পিউটার একবার রেকর্ড করে নিতে পারে তখন তো আর আপনাকে প্রয়োজন হবে না। ও একা একাই আপনার মতো করে পোস্ট দেয়া, মেসেজ দেয়া - সবকিছু পারবে।

তবে এই অসাধ্যকে সাধন করা সহজ কোনো কথাও না। কারন 86 বিলিয়ন নিউরন সমৃদ্ধ মানব মস্তিষ্কের অনুরুপ একটি তৈরি করতে যে পরিমান শক্তিশালী কম্পিউটার লাগবে তা এখনও বাজারে আসেনি।

আর যখন সম্ভব হয়েই যাবে, তখন আপনি বেঁচে না থাকা স্বত্তেও আপনার ব্রেইনকে সরাসরি কাজে লাগিয়ে জটিলতর বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হবে। আবার এই টেকনোলজি-ই মানবজাতির জন্য বিভিন্নভাবে হুমকিস্বরূপও হতে পারে। ব্যাপারটিকে আপনার কাছে কেমন মনে হয়?

Share: