"What's on your mind?" - "আপনার মনে কী চলছে?" বিখ্যাত এই বাক্যটি দিয়েই পৃথিবীর ২৯৩+ কোটি ফেসবুক ইউজারদের মার্ক জাকারবার্গ সর্বক্ষণ অনুরোধ করে যাচ্ছেন- "অন্তত একটি হলেও পোস্ট করুন।"
আর বেড়িয়ে আসতে থাকে, সমাজের বহুরূপী রুচির মানুষের সাব-কনসাস মাইন্ডে গচ্ছিত থাকা অধিকাংশ-ই রুচিহীন ও স্বল্পকিছু রুচি সমৃদ্ধ চিন্তাভাবনা বা কর্মকাণ্ড।
যেমন, এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কিছু ৩৫+ ভদ্রলোকদের থেকেও এমন আন-সোশ্যাল কর্মকাণ্ড দেখতে হচ্ছে, যা শুধুমাত্র ১০-১৫ বছরের উড়নচণ্ডী কৈশোরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত ছিলো।
আবার, ১৫+ কিশোর-কিশোরী যেভাবে ভার্চুয়াল জগৎ কন্ট্রোল করছে, তাতে তাদের মস্তিষ্কের চরম বিকৃতি ও ভয়াবহতা প্রমাণ করে।
যেসব তরুনী প্রকৃতি প্রদত্ত স্ব-সৌন্দর্যের স্বস্তা প্রদর্শনে তৃপ্তি পায় তাদের আচরণ ও মানসিকতার বিকৃতি এবং অবস্থার ভয়াবহতার খবর তো তাদের কাছে জেনেও না জানার মতো।
আর কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা সাময়িক কিছু স্বার্থ হাসিলের জন্য দলীয় অন্ধ ভক্ত হয়ে এমনভাবে মিথ্যা প্রশংসা ও কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকেন, মনে হয় যেন তাদের ব্যক্তিত্ব / পেশা / পরিবার / সমাজিক মর্যাদা ঐসব স্বার্থান্বেসী কর্মকান্ডের সামনে কিছুই না!
উপরোক্ত সব ধরণের মানুষই সাময়িক কিছু লাভ / তৃপ্তি / স্বার্থের জন্য নিজের মূল্যবান ব্যক্তি স্বত্বা-কে স্বস্তায় বিলিয়ে দিতে একটুও দ্বিধা বোধ করে না। অথচ প্রতিটি মানুষ-ই সৃষ্টির সেরা।
তাদের বিবেকে এক বিন্দুও নাড়া দেয় না যে, ফেসবুক এমন একটা প্লাটফর্ম যেখানে ১০ থেকে ৬০ বছরের মোট ৫০ ধরণের ভিন্ন বয়সী মানুষ রয়েছেন, যাদের চিন্তা-চেতনা ও বিবেচনায় রয়েছে ৫০,০০০ এর চেয়েও বেশি বৈচিত্রতা (just an example)।
পানির রঙ যেভাবে ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে ভিন্ন আকার ধারণ করে, তেমনি এখানেও একটি বাক্য লেখা হলে বা একটি কাজ করা হলে, একেক মানুষের মস্তিষ্কে একেক অর্থের উৎপত্তি ঘটাবে। যেমন এই পোস্টটি আপনি যেভাবে নিচ্ছেন, অন্য জন অবশ্যই একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখবে।
তাদের বিবেকে নাড়া না দেয়ার অন্যতম একটি কারন হতে পারে- নিজের সার্বিক কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র আশেপাশের কয়েকজন (ফেইক) শুভাকাঙ্ক্ষী দিয়েই বিচার করা, যারা সর্বক্ষণ মিথ্যা প্রশংসায় লিপ্ত থেকে সেই ব্যক্তিকে আরও বিকৃত মানসিকতায় পরিণত করে ফেলে।
ফেসবুক আইডিতে যদি Post Reached অপশনটা থাকতো, তাহলে বোঝা যেতো, একটা পোস্ট যে পরিমান মানুষের কাছে পৌঁছায় তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক মানুষই পোস্টটিতে রিয়্যাক্ট বা কমেন্ট করে। অধিকাংশ মানুষ-ই পোস্ট এর উপরিভাগ থেকে আবছা একটা ধারণা নিয়ে অন্য পোস্টে চলে যায়।
তাই পোস্টদাতার আর বোঝার কোনো উপায় থাকে না যে, তার মস্তিষ্ক স্বাভাবিক মানুষদের থেকে কতটা বিচ্যুত। কারন, সে তো গুটিকয়েক (ফেইক) পজেটিভ কমেন্ট ও রিয়াকশন দিয়েই সম্পূর্ণ ফ্রেন্ডলিস্টকে নিজের অস্বাভাবিক কর্মকান্ডের অনুকূলে ভাবতে থাকে।
তবে যাই-ই বলি না কেন, আমি নিজেও অস্বাভিকতার বাহিরে নই। হয়তো সেই অস্বাভিক কর্মকাণ্ড গুলো আমার কাছে ধরা পরছে না; যেমনি ভাবে আমি নিজে আমার চেহারা দেখতে পাই না। দেখার জন্য আয়না দরকার। কারও সম্ভব হলে সেই আয়না-টি আমার সামনে মাঝেমধ্যে ধরে উপকৃত করবেন।
So, What's on your mind? ফেসবুক কিন্তু এই বাক্য দিনের পর দিন বলেই যাবে। কার ব্যক্তিত্বের কি বিচ্যুতি বা অবনতি ঘটছে সেটা তো তার দেখার বিষয় না; কারন তাদের তো এসবের মাধ্যমেই প্রতি মুহুর্তে মিলিয়ন বিলিয়ন আর্থিক স্বার্থ উদ্ধার হচ্ছে...